Breaking News
Download http://bigtheme.net/joomla Free Templates Joomla! 3
Home / জাতীয় / খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নেওয়া হবে
khaleda zia

খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নেওয়া হবে

এগার দিন ধরে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপরসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

কাতারের আমিরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতের পর তাকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হবে বলে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন জানিয়েছেন।

বহস্পতিবার দুপুরে এভারকেয়ার হাসপাতালের বাইরে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, “যদি সবকিছু ঠিক থাকে, আমরা কাতার রয়্যাল এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আজকে এই মধ্যরাত্রের পরে অথবা আগামীকাল সকালের ভিতর উনাকে ইউকেতে, অর্থাৎ লন্ডনে, একটা নির্ধারিত হসপিটাল আমরা ঠিক করেছি, সেখানে আমরা উনাকে নিয়ে যাব।”

জাহিদ হোসেন জানান, বেশ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং বিদেশ থেকে আসা দুইজন চিকিৎসক এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে খালেদা জিয়ার সঙ্গে থাকবেন।

যাত্রাপথে যাতে কোনো ধরনের সমস্যা না হয়, সেজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়ার কথা জানিয়ে খালেদা জিয়ার জন্য দেশবাসীর দোয়া চান তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও বিএনপি নেতা জাহিদ।

খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হলে চীনও এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু সেক্ষেত্রে জ্বালানি নিতে মাঝে কোথাও নামতে হত, সরাসরি লন্ডনে যাওয়ার সুযোগ ছিল না। সব বিবেচনা করে খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান কাতারের আমিরের এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের পক্ষেই মত দেন বলে বিএনপির একজন নেতা জানিয়েছেন।

কাতারের আামির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করেই চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি চিকিৎসার জন্য লন্ডনে গিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। সেখানে লন্ডন ক্লিনিকে ভর্তি রেখে কিছুদিন তার চিকিৎসা চলে। পরিস্থিতির উন্নতি হলে কিছুদিন লন্ডনে তারেকের বাসায় থেকে চিকিৎসা নেন। অনেকটা সুস্থ হয়ে গত ৬ মে একই এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তিনি দেশে ফিরেছিলেন।

৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘ দিন থেকে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিসের পাশাপাশি কিডনি, লিভার, ফুসফুস, হৃদযন্ত্র, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। ২০২০ সালে কারাগার থেকে মুক্তির পর দলের কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে তিনি সরাসরি অংশ নেননি।

তবে এবার লন্ডনে চিকিৎসা করিয়ে আসার পর তাকে ঘিরে বিএনপিতে নতুন করে উদ্দীপনা তৈরি হয়। আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে তিনি দুটি আসনে ভোট করবেন বলে বিএনপির পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়।

এর মধ্যে গত ২৩ নভেম্বর রাতে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য খালেদা জিয়াকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু ফুসফুসে সংক্রমণ ধরা পড়ায় তাকে ভর্তি করে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে নেওয়া হয় ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে।

অন্তর্বর্তী সরকার মঙ্গলবার খালেদা জিয়াকে রাষ্ট্রের ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ (ভিভিআইপি) ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেয়।এর মধ্য দিয়ে সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্ব এসএসএফকে দেওয়ার ব্যবস্থা হয়। এরপর মঙ্গলবারই এসএসএফ ও পিজিআর সদস্যরা এভারকেয়ার এলাকার নিরাপত্তার দায়িত্ব নেয়।

তিন বাহিনীর প্রধানদের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান মঙ্গলবার রাতে এভারকেয়ারে গিয়ে খালেদা জিয়াকে দেখে আসেন। এরপর বুধবার রাতে সেখানে যান প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।

অধ্যাপক শাহাবুদ্দিন তালুকদারের নেতৃত্বে এভারকেয়ার হাসপাতালের ১২ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড খালেদা জিয়ার চিকিৎসার তদারক করছিলেন। চীন ও যুক্তরাজ্য থেকেও কয়েকজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক গত কয়েক দিনে দেশে আসেন চিকিৎসা সহায়তা দেওয়ার জন্য।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনা করে শুক্রবার জুমার পর দেশের সকল মসজিদে দোয়ার আহ্বান জানায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বিএনপির পক্ষ থেকেও শুক্রবার সব ধর্মের উপাসনালয়ে মোনাজাত ও প্রার্থনার কর্মসূচি দেওয়া হয়।

এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় এভারকেয়ার হাসপাতালে বৈঠকে বসে খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ড। যুক্তরাজ্য ও চীন থেকে আসা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরাও বৈঠকে অংশ নেন।

বৈঠক শেষে বেলা ২টা ৪০ মিনিটে এভারকেয়ারের সামনে সংবাদ সম্মেলনে আসেন ডা. জাহিদ হোসেন। তিনি জানান, খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছে মেডিকেল বোর্ড।

সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, “আপনারা অনেক দোয়া করেছেন, সেজন্য আমরা কৃতজ্ঞ। আপনাদের এই দোয়া ইনশাআল্লাহ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে সুস্থ করে তুলবে।”

একজন সাংবাদিক এসময় জানতে চান, খালেদা জিয়ার পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে কি না।

জবাবে ডা. জাহিদ বলেন, “পরিস্থিতি আগের থেকে উন্নতি হয়েছে। আমরা আপনাদেরকে আগেও বলেছি, মেডিকেল বোর্ডের পরামর্শের বাইরে কোনো অবস্থাতেই উনার পরিবার অথবা আমরা দল কোনো অবস্থাতেই কোনো চিন্তা করছি না।

“আমরা এখনো আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের অশেষ মেহেরবানিতে অনেক অনেক আশাবাদী। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, উনার নামের আগে আমরা সবাই আপসহীন বলি। আল্লাহর অশেষ মেহেরবানিতে উনি অনেক প্রতিকূলতার মাঝেও ঘুরে দাঁড়িয়েছেন। এবারও ইনশাআল্লাহ উনি আমাদের মাঝে ফেরত আসবেন, এ আশাবাদ ব্যক্ত করছি।”

About Md. Mahmudul H Imran

Check Also

khaleda zia

খালেদা জিয়াকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ ঘোষণা করেছে সরকার

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গুরুতর অসুস্থ খালেদা জিয়াকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ ঘোষণা করেছে সরকার, যার মাধ্যমে তার …

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।